সংখ্যাপদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিজাইন
ক্লাশ ১: সংখ্যাপদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিজাইন
আজকে আমরা একটা বাইনারি সংখ্যাকে অক্ট্যালে রূপান্তর করা দেখব।
ধর আমাদের নির্বাচিত বাইনারি সংখ্যাটি হলো (১১১০০১০১১)২ এবং আমরা এই বাইনারি সংখ্যাটাকে অক্ট্যালে রূপান্তর করব।
প্রথমেই বাইনারি সংখ্যাটিকে ডান পাশ হতে তিনটি করে ডিজিটে আলাদা করি –
১১১ ০০১ ০১১
এইবার প্রতিটি ভাগের ডেসিমাল মান বের করি
১১১ হলো ৭
০০১ হলো ১
০১১ হলো ৩
এখন ডেসিমাল মানটিকে পাশা পাশি বসাও –
৭১৩ ব্যাস অক্ট্যাল সংখ্যায় রূপান্তর হয়ে গেল।
সুতরাং (১১১০০১০১১) ২ = (৭১৩)৮
৩.০৯ :: যেকোন সংখ্যা পদ্ধতি হতে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তরের সাধারন নিয়ম
ধাপ ১- প্রদত্ত সংখ্যাটির বেজ বা ভিত্তি সনাক্ত করে অন্তর্গত প্রত্যেকটি অংকের স্থানীয় মান বের করতে হবে।
ধাপ ২- সংখ্যার অন্তর্গত প্রত্যেকটি অংকের নিজস্ব মানকে তার স্থানীয় মান দিয়ে গুন করতে হবে।
ধাপ ৩- গুনফল গুলোর যোগফলই হবে সমতুল্য দশমিক সংখ্যা।
উদাহরন:
বাইনারী হতে দশমিকে রূপান্তর
1*2^4+1*2^3+0*2^2+1*2^1+1*2^0
= 16+8+0+2+1
= (27)10
৩.০৮ :: দশমিক হতে অন্য যেকোন সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তরের সাধারণ নিয়ম
পূর্ণাংশের ক্ষেত্রে –
ধাপ ১: যে দশমিক পূর্ণসংখ্যাকে পরিবর্তন করতে হবে তাকে কাংখিত সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি দ্বারা ভাগ করতে হবে এবং ভাগশেষটি সংরক্ষন করতে হবে।
ধাপ ২: উপরে প্রাপ্ত ভাগফলকে আবার কাংখিত সংখ্যাপদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি দ্বারা ভাগ করতে হবে এবং ভাগশেষটি সংরক্ষন করতে হবে।
ধাপ ৩: উপরের ধাপটি ততক্ষন পর্যন্ত চলবে যতক্ষন না ভাগশেষ শূন্য হয়।
ধাপ ৪: শেষে প্রাপ্ত ভাগশেষের দিক হতে শুরুতে প্রাপ্ত ভাগশেষের দিকে ভাগশেষগুলোকে সাজিয়ে লিখলেই রূপান্তরিত সংখ্যা পদ্ধতির পূর্ণাংশ পাওয়া যাবে।
উদাহরন হিসাবে নিম্বোক্ত ভিডিওটি সংযুক্ত করা হলো:
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে –
ধাপ ১: যে দশমিক ভগ্নাংশকে পরিবর্তন করতে হবে তাকে কাংখিত সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি দ্বারা গুন করতে হবে এবং প্রাপ্ত গুনফলের পূর্ণাংশটি সংরক্ষন করতে হবে।
ধাপ ২: উপরের ধাপে প্রাপ্ত ভগ্নাংশকে আবার কাংখিত সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি দ্বারা গুন করতে হবে এবং পূর্ণাংশটি সংরক্ষন করতে হবে।
ধাপ ৩: উপরের ধাপটি ততক্ষন পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষন না গুনফলের ভগ্নাংশ শূন্য হয়।
ধাপ ৪: শুরুতে প্রাপ্ত পূর্ণসংখ্যার দিক হতে শুরু করে শেষে প্রাপ্ত পূর্ণাংশের দিকে সাজিয়ে লিখলেই রূপান্তরিত সংখ্যা পদ্ধতির ভগ্নাংশ পাওয়া যাবে।
৩.০৭ :: অক্ট্যাল ও হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা
কম্পিউটারের সমস্ত আভ্যন্তরীন কার্য একমাত্র বাইনারী পদ্ধতিতে সংঘটিত হয় এবং আভ্যন্তরীন কাজের ব্যাখ্যার জন্য দরকার হয় অসংখ্য ০ এবং ১ বিটের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার বর্ণনা। ০ এবং ১ দিয়ে এ ধরনের বর্ণনা লিখা খুবই বিরক্তিকর এবং তাতে ভূল হবার সম্ভাবনা বেশি। সেজন্য অক্ট্যাল ও হেক্সাডেসিমাল পদ্ধতিদ্বয়কে সাধারনত বাইনারি সংখ্যার সংক্ষিপ্ত সংকেত হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কারন কোন প্রকার জটিল হিসাব নিকাশ ছাড়াই বাইনারি থেকে অক্ট্যাল ও হেক্সাডেসিমালে পরিবর্তন করা যায়।
৩.০৬ :: হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি
- হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ১৬। এই পদ্ধতির ১৬টি অংক হলো- ০, ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F
- ছোট বড় প্রায় সকল কম্পিউটারে এই গননা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
- সারনীতে হেক্সাডেসিমাল পদ্ধতিতে গননার রীতি দেখানো হলো:
৩.০৫ :: অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System)
- অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ৮ (আট)। এই পদ্ধতির আটটি অংক হলো ০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭।
- আধুনিক কম্পিউটার উন্নয়নের প্রাথমিক অবস্থায় এই গননা পদ্ধতি ব্যবহার করা হত।
- সারনীতে অক্ট্যাল পদ্ধতিতে গননার রীতি দেখানো হলঃ
দশমিক পদ্ধতি | অক্ট্যাল পদ্ধতি |
০ | ০ |
১ | ১ |
২ | ২ |
৩ | ৩ |
৪ | ৪ |
৫ | ৫ |
৬ | ৬ |
৭ | ৭ |
৮ | ১০ |
৯ | ১১ |
৩.০৪ :: কম্পিউটার ডিজাইনে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহারের কারণ
- প্রাত্যহিক জীবনে দশমিক সংখ্যাপদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। দশমিক সংখ্যাপদ্ধতিতে বিভিন্ন হিসাবের জন্য দশটি পৃথক অবস্থার প্রয়োজন। কম্পিউটার ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের সাহায্যে কাজ করে। ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের সাহায্যে দশমিক সংখ্যার দশটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা প্রকাশ করা অসম্ভব না হলেও খুব কঠিন। কিন্তু বাইনারি সংকেতকে খুব সহজেই ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়।
- ডিজিটাল / ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ বাইনারি মোডে কাজ করে। যেমন- একটি ম্যাগনেটিক কোর ক্লক ওয়াইজ বা এন্টি ক্লক ওয়াইজ হতে পারে। একটি সুইচ OFF অথবা ON হতে পারে। ইলেকট্রনিক সিগন্যাল Present অথবা Absent থাকতে পারে। এগুলোর সাথে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির মিল রয়েছে।
- বাইনারি সিস্টেমে মাত্র ২টি অবস্থা থাকায় ইলেকট্রনিক সার্কিট ডিজাইন খুবই সহজ হয়। এই সকল নানাবিধ কারনে বাইনারি পদ্ধতি কম্পিউটার ডিজাইনে ব্যবহার সুবিধাজনক।