টাকার কথা –০১

এবার টাকার কথা বলি। আগেও বলেছি, আবার বলি। টাকার কথা যেন বলে শেষ করাও যায় না। টাকা যেই সৃষ্টি করুক, সৃষ্টির পর থেকেই টাকা যেন তার সৃষ্টিকর্তাকেও আর মানতে চাইলো না। মধ্যযুগ পেরিয়ে টাকা যখন সাবালক হলো তখন তার পাঁচ পা গজিয়েছে। আগে টাকা ছিল ব্যক্তির, এখন হলো দশের। টাকা একদিন বলল – আমি বহু হব। আর তাই সে হলো। তখন সে মাটিতে পোতা সম্পত্তি রইল না আর। কখনও হলো সোনা। সোনা হয়ে অলংকার হলো। কখনো কাগজ হয়ে নোট হলো, আবার কখনো চেক হয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকল। টাকার তখন দুর্দম গতি। আগে টাকা ছিল মানুষের বাহন, এখন মানুষ হলো টাকার বাহন। আগে মানুষ বলত – টাকা চাই। এখন টাকা বললে – মানুষ চাই। টাকার মানুষরা শেষকালে আর কোথাও মানুষ পায়না শিকার করবার। তখন নতুন মানুষ, নতুন মহাদেশ খুঁজতে বেরোল সমুদ্র পেরিয়ে। খুঁজতে খুঁজতে পেল আফি্যকা, ইন্ডিয়া, চায়না, জাপান। এখানে জিনিষ ছিল, টাকা ছিল না। মহাজনরা বলল- তোমাদের জিনিষ দাও, তোমাদের আমরা টাকা দেব। জিনিস বেচে প্রচুর টাকা হলো। টাকার পাহাড়। তারপর একদিন দেশে মহামারি হলো, দুভিক্ষ হলো, বন্যা হলো। চাল, ডাল, তরি তরকারি কিছু নাই, সব বেচে দিয়েছি। খালি টাকা আছে। কিন্তু টাকাতে পেটের ক্ষিদে মেটেনা। তখন আমরা চালাক হয়ে গেলাম। টাকাকে বাঁধতে হবে, টাকাকে বুঝতে হবে, টাকাকে ভাল বাসতে হবে। টাকা আগে ছিল মানুষের ক্রিতদাস, তখন থেকে মানুষ হলো টাকার ক্রিতদাস।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান